আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রীদের নাক-কান দিয়ে রক্ত বেরোনোর জেরে মুম্বাই বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে ভারতের জেট এয়ারওয়েজের একটি বিমানকে। মাঝ আকাশে বাতাসের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিমানচালকরা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুইচ টিপতে ভুলে যাওয়ার কারণেই কেবিনের ভেতরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে ঘটেছে এ বিপত্তি। অন্তত ৩০ জন যাত্রীর নাক-কান দিয়ে রক্ত ঝরেছে। কান ব্যাথা, মাথাব্যাথাতেও ছটফট করেছেন অনেকে। কারো কারো শ্বাসকষ্টও হয়েছিল। বিমানটি তাড়াতাড়ি অবতরণ না করলে যাত্রীদের কেউ কেউ মারাও যেতে পারত।
বিবিসি জানায়, জেট এয়ারওয়েজের ৯ডব্লিউ ৬৯৭ ফ্লাইট বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে জয়পুরের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কিছুসময় পরই ফের মুম্বাইয়ে ফিরে আসে।
বিমানটি ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকলে তারা আতঙ্কিত হয়ে চেঁচামেচি শুরু করে। আপদকালীন অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
তখনই পাইলটরা বুঝতে পারেন, বিমানের ভেতরে বাতাসের চাপ নিয়ন্ত্রণের সুইচ অন করা হয়নি।
এরপরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে যোগাযোগ করে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি ১৬৬ যাত্রী নিয়ে বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে। যাত্রীরা নামার পর সবাইকেই প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।
৯ডব্লিউ ৬৯৭ ফ্লাইটের কেবিনে বাতাসের চাপ কমে যাওয়া এবং অক্সিজেন মাস্ক নেমে আসার একটি ভিডিও টুইট করেছেন বিমানটির এক যাত্রী। টুইটারে পোস্ট করা যাত্রীদের ভিডিওতে বিমানটির ভেতরে অক্সিজেন মাস্ক দেওয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে।
অন্য এক যাত্রী সতিশ নাইরের টুইট করা ছবিতে তার নাক দিয়ে রক্ত বের হতে দেখা গেছে। জেট এয়ারওয়েজ যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি অবজ্ঞা করেছে বলেও অভিযোগ তার।
ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। দায়িত্বে থাকা ক্রু কেবিন প্রেসার নিয়ন্ত্রক সুইচ অন করতে ভুলে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্লাইটটির ককপিট ক্রুদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়।
যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে জেট এয়ারওয়েজ।
এর আগে গত জানুয়ারিতে ককপিটের ভেতর মারামারির খবর পাওয়ার পর জেট এয়ারওয়েজ তাদের দুই বিমানচালককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল।
৩২৪ যাত্রী নিয়ে লন্ডন থেকে মুম্বাইগামী ওই ফ্লাইটটিও নিরাপদেই অবতরণ করতে সক্ষম হয়।